শহর থেকে একদিন জনি ভাই আর
তার প্রেমিকা নাদিয়া দিদি আমাদের গ্রামে আসলো। আমাদের ছোট্ট গ্রাম। আর শহরের মত
ভালো ব্যবস্থা নেই। তারা বাস থেকে নেমে আমাকে ফোন করে। আমি তাদের গ্রাম্য ভ্যানে
করে নিয়ে আসি। যাই হোক ভ্যানের চাকা উচু নিচু রাস্তায় ঝাঁকি খায় আর নাদিয়া আপু ভয়ে
চিল্লায়। জদিও যদি ভাই কম ভয় পেয়েছে। গ্রাম্য রাস্তায় এই প্রথম তারা এসেছে। অনেক
নতুন অভিজ্ঞতা পেতে। অনেক রোম্যান্টিক তারা দুজন। এবার গরমের ছুটিতে এসেছে আমাদের গ্রামে ঘুরে
দেখতে।
আগের দিন রাতে ঝড় হয়েছিল। তাই গাছ থেকে অনেক আম পড়েছে। জনি দাদা আর নাদিয়া
দিদিকে আমি সেই আমগুলি খেতে দেই। অনেক তৃপ্তি নিয়ে তারা আমি খায়। ওহ বলতে ভুলে
গেছি। জনি দাদা পুকুরে সাঁতার কাটতে পছন্দ করে। নাদিয়া আপু পছন্দ করে টক খেতে আর
দুষ্টুমি করতে। আমাদের বাসার পাশে একটি তেঁতুল গাছ আছে। নাদিয়া আপু এসেই এক দৌরে
গাছের মাথায় চড়ে বসল। তার কাজ দেখে জনি ভাইয়া অবাক। ভাইয়া যেন রেগে যাচ্ছে খুব।
জনি ভাইয়া রাগলে আমরা সবাই মজা পাই। আপু আরও রাগাতে তাকে তেঁতুলের বিচি ছুরতে থাকে
উপর থেকে। জনি ভাইয়া কি করবে বুঝতে পারছিল না। নিচে বসে বসে দেখা ছারা তার কোন
উপায় নেই। কারন ভাইয়া গাছে চড়তে পারে না। উপায় নেই দেখে ভাইয়া গাছ তলা থেকে চলে
গেলেন। আমি নিচে দারিয়ে। নাদিয়া আপু আমাকে একটি তেঁতুল দিল। আমি ক্যাঁচ ধরলাম।
তারপর খেলাম। সারা বিকাল আমি আর আমার নাদিয়া আপু মজা করলাম। আর জনি ভাইয়া একা একা
আমাদের পাশের পুকুরে মাছ ধরা দেখছিলেন।
নাদিয়া আপু আর জনি ভাইয়া আমাদের গ্রামে থাকবেন প্রায় এক সপ্তাহ। যাই
হোক অনেক মজা করব আমরা সবাই। ক্রিকেট খেলায় নাদিয়া আপুর প্রিয় পাকিস্তান আর আমাদের ভারত। ফুটবলে আমি পর্তুগাল, নাদিয়া আপু আর জনি ভাইয়া আমেরিকা। আমেরিকাতে নয়টি বিখ্যাত জায়গা গত বছর আমার ঘুরে এসেছিলাম। সেই নয়টি আমেরিকার গল্প আরেকদিন বলব। এখন রাতে পুকুরের মাছ আপু আর ভাইয়াকে খাওয়ার জন্য দেওয়া হল। অনেক বড় বড় মাছ। দেখে তারা খুব খুশি। শহরে তারা মাছ খায় তবে গ্রামে তাজা মাছ দেখার মজাই আলাদা।
গ্রামে বিদ্যুৎ নেই। হ্যারিকেনের আলোয় থাকতে হচ্ছে। গতকাল একটু ঝড় বৃষ্টি এর কারনে আজ একটু ঠাণ্ডা পড়েছে। তারপরও নাদিয়া আপুকে একটি হাত পাখা দেই। যাতে গরম লাগলে ব্যবহার করতে পারেন। তারপর আমাদের জনি ভাইয়া আজ বারান্দায় ঘুমাতে চায়। কারন বাইরে ঠাণ্ডা বাতাস আছে। আমার লাগছে। রাতে হথাৎ শব্দে ঘুম ভাঙল। আমরা সবাই বাইরে গেলাম দৌরে। দেখলাম জনি ভাইয়া নেই। নাদিয়া আপু ভয় পেল। তারপর দেখলাম আওয়াজ পুকুর পাড় থেকে আসতেছে। আমরা সেখানে ছুটে যাই। দেখি জনি ভাইয়া একজনকে মারছেন। ওটা কালু মিয়া। মিয়া একটা চোর। মাছ চুরি করা তার কাজ। জনি ভাইয়া রাতে পুকুর ঘাট থেকে শব্দ পেয়ে সেখানে যেয়ে মাছ মারতে দেখে মিয়াকে। জনি ভাই অনেক শক্তিশালী। নিয়মিত জিম করে থাকেন। তার ফিগার দেখে মেয়েরা অনেকেই ক্রাশ খায়। যাই হোক মিয়াকে ধরে ফেলল। তার সাথে আসা মিয়ার ছেলে সানি মারতে গেলে জনি ভাইকে। কিন্তু ভাইয়ের সাথে পারল না। কিছু মার খেয়ে কষ্টে বেঁচে পালালো সে। কিন্তু মিয়াকে পালাতে দিল না জনি ভাই। ধরে ফেলল। মানুষের বাড়ি বেড়াতে এসে এমন উপকার করা সত্যিই অসাধারন। জনি ভাই আসলেই একজন ভালো মানুষ। আজ এই পর্যন্ত। আগামি পোস্টে বলব জনি ভাই আর নাদিয়া আপুর আরও গল্প।
No comments:
Post a Comment