Tuesday, June 4, 2019

জনি ভাইয়া আর নাদিয়া আপুর সাথে নৌকা ভ্রমণ, "কি মিয়া সাঁতার জানো?"

জনি ভাইয়া আর নাদিয়া আপুর সাথে পরের দিন আমরা নৌকা ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নেই। আমরা যাব পাশের নদীতে। আর সেখান থেকে নৌকায় চড়ে নদীর পাশ দিয়ে আমরা পাশের বিলে যাব। সেখানে শাপলা তুলব আর অনেক মজা করব। এটাই প্লান আমাদের। আপু আর ভাইয়া আসবে জেনে আগে থেকেই আমি নৌকা ঠিক করে রেখেছিলাম। মোটামুটি ভালো নৌকা। ইঞ্জিন নেই। বৈঠা দিয়ে চালাতে হয়। মাঝি মোটামুটি দক্ষ চালক। আমাদের গ্রামের আজকের এই ভ্রমণের কাহিনি জনি ভাইয়া আর আমাদের প্রিয় নাদিয়া আপুর অনেকদিন মনে থাকবে। আমরা খুব সকালে যাই নৌকাতে চড়তে।

শহর থেকে তারা এসেছে। তাই সকালে উঠার অভ্যাস নেই তাদের। তাই আমাকেই ডাকতে হয়। উঠতে উঠতে সকাল ৫.১৫ মিনিটে আমরা গুছিয়ে নেই। সাথে কিছু খাবার আর জনি ভাইয়ের ভিডিও বানানোর ক্যামেরা নেই। এই ক্যামেরা দিয়ে নাকি হলিউডে আমেরিকাতে শুটিং করা হত। যাই হোক আমি কখনো আমেরিকা যাই নি। তবে টিভিতে দেখেছিলাম এক বিদেশির হাতে এই ক্যামেরাটি। আজ প্রথম জনি ভাইয়ার কাছে দেখে অনেক অবাক লাগল। জনি ভাইয়াকে বললাম নাদিয়া আপুর আর আমার একটি ছবি নিতে। ভাইয়া অনেক সুন্দর ছবি তুলতে পারেন। যাই হোক আমরা নৌকাতে উঠতে গেলাম। তারপর উঠব। দেখলাম আমাদের মাঝি সময় মত চলে এসেছে। মাঝারি বয়সের লোকটি। মুখে দারি আছে। জনি ভাইয়ের আর আমার অবশ্য দারি নেই। যাই হোক আজ যতক্ষণ আমরা চাই ঘুরব। এই চুক্তি তার সাথে। জনি ভাই আজ লুঙ্গি পড়েছে। এটা প্রথমবার জনি ভাইয়া লুঙ্গি পড়েছে। আর আমাদের নাদিয়া আপু পড়েছে একটি নিল রঙের সুন্দর শাড়ি। শাড়িতে আপুকে অসাধারন লাগছে। তাদের দেখে আমাদের গ্রামের সবাই অবাক তাকিয়ে আছে। আগে আমাদের গ্রামে শহর থেকে কেউ আসে নি তাই। মাঝির নাম তমাল মিয়া। আমাদের দেখে এগিয়ে আসলেন। তারপর আমাদের নৌকায় উঠালেন। আমরা নৌকাতে বসে পড়লাম। আমাদের বসার জন্য নৌকায় ভালো ব্যবস্থা করেছেন তিনি। আমরা ভ্রমণ শুরু করলাম। সবাই খুব খুশি। জনি ভাইয়া ভিডিও করছেন। এবার আমি জনি ভাইয়ার সাথে নাদিয়া আপুর অনেক গুলি ছবি তুললাম। দুজনকে খুব সুন্দর লাগছিল। আপুও প্রথমবার আজ শাড়ি পরেছেন। আমরা যাওয়ার সময় কিছু ট্রলার দেখলাম। আরও দেখলাম কিছু মাছ ধরার নৌকা। আমরা কিছু দূরে যাওয়ার পর একটি খাল দিয়ে আমাদের প্রিয় বিলে চলে আসলাম। দেখলাম অনেক বড় বিল পানিতে ভরা। ধান হয়েছে অনেক। আরও দেখলাম পাট হয়েছে। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এবার নাদিয়া আপু জনি ভাই আর আমার উপরে পানি ছিটিয়ে দিলেন। খুব দুষ্টুমি করতে পারে আমাদের আপু। এখানেও শুরু করলেন। আমি মজা পেলাম। জনি ভাইয়াও মজা পেলেন। আমাদের সামনে কিছু শাপলা গাছ। ভোরের ফোটা শাপলা দেখতে অসাধারন লাগে। আপু তো লাফাচ্ছিল তুলার জন্য। তুলতে লাগলাম আমরা। আমরা অনেক ছবি তুললাম আর মজা করতে থাকি।
সবই ভালো চলছিল কিন্তু সকালে ঝড় এসে গেল আগের দিন রাতে মত। আমাদের মাঝি বলল, "কি মিয়া সাতার জানো?"
মিয়া আপু বলল ,"না"।
"তাহলে তুমাদের ১৬ আনা মিছে"
জনি ভাইয়া আর আমি বললাম ,"আমাদের লাইফ জ্যাকেট আছে"
এবার বড় পলিথিনে ভাইয়ার ক্যামেরা আর মোবাইল গুলি আমরা রাখি। তারপর। শাপলা বেধে ফেলি। ঝড় শুরু হল, নৌকা ডুবে গেল। আমরা ভাসছি।
২০ মিনিট পর ঝড় থামল। তারপর নৌকা আমরা খুজে পেলাম। মাঝিকে জনি ভাইয়া হেল্প করেন আর নৌকা ঠিক হয়। মোটামুটি মাঝে আমরা ফিরে আসতে পারব এমন অবস্থা। তারপর আমরা বাসায় ফিরি। অনেক মজার ছিল। বেচারা মাঝি ঝড়ের ভেতর ভয় পেলেও আমরা মজা করছি খুব।

No comments:

Post a Comment